Sustain Humanity


Saturday, May 23, 2015

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক নিষ্ক্রিয় !

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক নিষ্ক্রিয় !
মতিউর রহমান  <journalist163@gmail.com>

প্রতিষ্ঠার এক দশকেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। দশ বছরে মামলা করেছে ৩ হাজার ৬৬২টি। কিন্তু এর একটিও আপিল বিভাগে প্রমাণিত হয়নি। চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাগারে নেই কোনো দুর্নীতিবাজ। একমাত্র বনখেকো ওসমান গনি দ-াদেশের বিরুদ্ধে আপিল না করে স্বেচ্ছায় কারাভোগ করছে।
মামলা দায়েরের পর তদন্তে আসামিদের অব্যাহতি দেয়ার প্রবণতাই বেশি দুদকের দশ বছরের কার্যক্রমে। চার্জশিট দাখিলের অনুপাতও কম। 
লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার তালিকায় প্রভাবশালী আমলা ও রাজনীতিবিদের সংখ্যাই বেশি।
পর্যবেক্ষক মহল মনে করে যে, দুর্নীতিবিরোধী রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠান জন্মলগ্ন থেকেই আমলাদের করায়ত্তে। নানাভাবে এটিকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। যখনই সক্রিয় হয়, তখন থেকেই এটি পরিণত হয়েছে সরকারের রাজনৈতিক হাতিয়ারে। আইনত স্বাধীন হলেও কার্যক্রমে সরকার ও দুদক ছিল একাট্টা। অতি সম্প্রতি দুদক পরিণত হয় দায়মুক্তি কমিশন-এ। পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলার সব আসামিকে অব্যাহতি, হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে সরকার-ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা, প্রভাবশালী মন্ত্রী-নেতা-আমলাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিত হয়েছে।
অপরদিকে আদালত ও দুদকের সংশি¬ষ্ট সূত্রগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মামলা পরিচালনার জন্য দুদককে এখনো সরকারি প্রসিকিউশন ও এটর্নি জেনারেলের দফতরের মুখাপেক্ষী থাকার কারণে তারা বিচার প্রক্রিয়ায় সুবিধা ও ভালো ফল ঘরে তুলতে পারছে না। দুদকের মামলায় এখনো লেখা হচ্ছে 'আসামি বনাম রাষ্ট্র'। যেখানে হওয়া উচিত 'আসামি বনাম দুদক'। কারণ দুর্নীতি মামলার বিচারের দায়িত্ব রাষ্ট্রের নয়। দুদকের নিজস্ব প্রসিকিউশন ইউনিট নিরপেক্ষভাবে বিচার পরিচালনা করার কথা। কিন্তু দুদক আইনে সংশোধনী না আনার কারণে রাষ্ট্রের মুখাপেক্ষী থাকতে হচ্ছে দুদককে। সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ও পরে বলেছিল দুদকের ক্ষমতা বাড়াবে। কিন্তু কার্যত তিন বছরে দুদককে শক্তিশালী করা বা দুর্নীতির বিচারে রাষ্ট্রপক্ষের নজরদারি বৃদ্ধিসহ সার্বিক সহায়তা করার কোনো নজির নেই। বরং অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাই দুদকের মামলার বিচারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুদকের যে ক'জন প্যানেল আইনজীবী আছে তাদের মধ্যে অনেকেই স্রোতের সাথে গা ভাসিয়ে দিচ্ছে। কেউ কেউ আন্তরিক হলেও দুদক থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই বাস্তবতায় বর্তমান সরকারের আরো দুই বছর মেয়াদকালে দুদক আসলে কার্যকর কিছু করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। 
বলাবাহুল্য, প্রধানমন্ত্রী থেকে পিওন সবাই মানুষ। কেউ মানুষ তৈরিকারী- মহান আল্লাহ পাক তিনি নন। সাধারণ মানুষ মানুষের অন্তরের গতি-প্রকৃতি উপলব্ধি করতে পারে না। নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তাই মানুষের তৈরি আইন কখনো মানুষ শৃঙ্খলিত করতে পারে না। এক মানুষের তৈরি আইনের ফাঁক-ফোকর অন্য মানুষ সহজেই ধরে ফেলতে পারে। আইনের প্যাঁচ গলিয়ে অথবা প্রভাব তৈরি করে সহজেই পার পেয়ে যেতে পারে। জাল কাগজপত্র দিয়ে হাইকোর্ট থেকে জামিন অথবা অনেক বিচারকের দুর্নীতিই এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত উদাহরণ নয়। বরং কোন্টি উদাহরণ নয়- সে প্রশ্নও এখানে সঙ্গত। 
অপরদিকে মানুষের কথা মানুষের অন্তরে প্রভাব বিস্তার করতে পারে অতি-অল্পই। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত এবং অনিবার্য বিষয় হলো- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ওহী মুবারক। মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ। অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ। 
যে কারণে দেখা যায়, যত গুনাহগার বা সাধারণ লোকই হন না কেন তিনিও যখন রোযা রাখেন, তখন প্রচ- গরমের দিনেও পুকুরে ডুব দিয়ে অথবা একাকী বাড়িতে থেকেও তিনি পানি পান করেন না অথবা খাদ্য খান না। এখানেই ওহীক বোধের সার্থকতা এবং অনবদ্যতা। তার বিপরীতে কোনো সাধারণ মানুষের জন্য মানুষকে হিদায়েত করার যোগ্যতা নেই। কারণ সাধারণ মানুষ নিজেই নিজের অজান্তে অনিয়ম করে থাকে। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, "তোমরা ঐ কথা বল কেন- যা তোমরা নিজেরাই করো না।"
বলাবাহুল্য, আদেশ দেয়ার ক্ষমতা মহান আল্লাহ পাক উনার, আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, "তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং যারা উলীল আমর উনাদের হুকুম পালন করো।"
মূলত, এছাড়া যারা আদেশ দিবে, যারা মানুষের আইন প্রয়োগ করতে চাবে তারা যালিম, ফাসিক, কাফির। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, "যারা মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ ব্যতীত আইন প্রয়োগ করে তারা যালিম, ফাসিক ও কাফির।" 
বলাবাহুল্য, মহান আল্লাহ পাক উনার আইন প্রয়োগ না করলে শুধু যে যালিম, ফাসিক ও কাফির হবে তাই নয়; বরং প্রচলিত আইনের দ্বারা সমাজে কোনোদিনই শান্তি ও ইনসাফ আসবে না। সবচেয়ে বড় কথা- প্রচলিত আইনেরও শতভাগ প্রয়োগ বাস্তবে কেনোদিনই হবে না।

No comments:

Post a Comment