Sustain Humanity


Tuesday, August 18, 2015

আগেও বলেছিলেন। এ বার আরও তীব্র আক্রমণে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সরকারকে বিঁধলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।



আগেও বলেছিলেন। এ বার আরও তীব্র আক্রমণে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সরকারকে বিঁধলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে সরে যেতে চেয়ে এক চিঠিতে অমর্ত্যবাবু লিখেছিলেন, ‘‘আচার্য হিসেবে সরকার যে আমাকে চায় না, আমার পক্ষে তেমনটা না ভাবাই কঠিন।’’ খেদের সঙ্গে বলেছিলেন, দেশ জুড়ে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলছে। নালন্দাও তার বাইরে নয়। এ বার নিজের সাম্প্রতিক প্রবন্ধ সংকলন ‘দ্য কান্ট্রি অব ফার্স্ট বয়েজ’-এ অমর্ত্যবাবু লিখেছেন, ‘‘বর্তমান জমানায় শিক্ষায় সরকারি হস্তক্ষেপ অতি সাধারণ ঘটনা। তা প্রায়ই চূড়ান্ত রাজনৈতিক রূপ নিচ্ছে।’’
শুধু সরকারি হস্তক্ষেপ নয়, শিক্ষায় গৈরিকীকরণের অভিযোগও তুলেছেন ৮১ বছরের নোবেলজয়ী। তাঁর কথায়, ‘‘বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিতে যাঁদের বেছে নেওয়া হচ্ছে, তাঁরা হিন্দুত্বের প্রচার করা নিয়েই বেশি মনোযোগী।’’ পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান পদে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ গজেন্দ্র চৌহানকে বসানো নিয়ে অচলাবস্থা চলছে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। অমর্ত্যবাবু অবশ্য তুলেছেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব হিস্টোরিক্যাল রিসার্চ (আইসিএইচআর) এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর)-এর শীর্ষ পদাধিকারীদের প্রসঙ্গ। আইসিএইচআর-এর নতুন প্রধান ওয়াই সুদর্শন রাও সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, ‘‘ঐতিহাসিক গবেষণা দিয়ে ওঁকে হয়তো কেউ চিনবে না। তবে ওঁর হিন্দুত্ব-বিষয়ক মন্তব্যগুলি সুপরিচিত।’’ একই ভাবে আইসিসিআর-এর নতুন প্রধান লোকেশ চন্দ্র যে মোদীকে ‘ভগবানের অবতার’ বলেছিলেন, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন অমর্ত্যবাবু।
তাঁর প্রবন্ধে স্থান পেয়েছে নালন্দার কথাও। অমর্ত্যবাবু ফের আচার্য পদে বসতে না চাওয়ায় গত ৩০ মে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সিঙ্গাপুরের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী জর্জ ইয়োকে নালন্দার নতুন আচার্য পদে মনোনীত করা হয়। অমর্ত্যবাবুর বক্তব্য, ইয়ো যেন নালন্দাকে উৎকর্ষের পথে নিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা পান। আইসিএইচআর এবং আইসিসিআর-এর মতো বিভেদের পথে নালন্দার অধঃপতন যেন না হয়।
নোবেলজয়ী অকপটে লিখেছেন, তাঁকে আচার্য পদে রাখা নিয়ে সরকার ও নালন্দার পরিচালন পরিষদের টানাপড়েন নালন্দার পুনর্গঠনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। এই কথাটা বুঝতে পেরেই তিনি পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি খোলাখুলি বলেছি, একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ চালানোর ব্যাপারে শ্রী মোদীর যোগ্যতা সম্পর্কে আমার সন্দেহ আছে। কাজেই আমার আচার্য পদে থাকা নিয়ে সরকারের তরফে আপত্তিতে আমি খুব একটা বিস্মিত নই। কিন্তু ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের চেয়ে (যদিও বিজেপির অনেক নেতার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক আছে) নালন্দার মতো প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতাটাই বড় কথা।’’
অমর্ত্যবাবুর গত দেড় দশকের প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে তাঁর নতুন বইয়ে। লেখকের কথায়, সব ক’টি প্রবন্ধের একটি মূল সুর আছে। সেই সুরটি হল, বিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে, সাম্য ও সুবিচারের দৃষ্টিতে ভারতকে দেখার প্রয়াস।
amartya sen protests against modi government to politicise the academic arenas
ANANDABAZAR.COM|BY সংবাদ সংস্থা

No comments:

Post a Comment