নাজিয়া,পায়েল,মিতা।কিছু নাম,কিছু মৃত স্বপ্নের গল্প,প্রচুর প্রশ্ন।
Arnab
ধুবলিয়া।নদিয়া জেলার দিনের বেশিরভাগ সময় ফাঁকা পরে থাকা এক স্টেশনের নাম।আজ আমাদের গন্তব্য ছিল সেখানেই।আমরা মনে আমি,সায়ন দা, মৃণ্ময়দা,কবিরদা । গিয়ে শুনলাম গ্রাম বাংলার এক হতভাগ্য কন্যার মর্মান্তিক পরিণতির কাহিনী।
গল্পটা শুরু আজ থেকে দেড় বছর আগের।ধুবলিয়ার বাসিন্দা পায়েল হাজরার সাথে বিয়ে হয় রিষড়া নিবাসি এক আপাত দৃষ্টিতে ভদ্রলোক এক ব্যাংকে কর্মরত ব্যক্তির। বিয়ের পর থেকেই শশুর বাড়ির লোকদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে ওঠে পায়েলের জীবন।আমাদের থেকে অনেক বেশি সংগ্রাম করতে হয় ওকে কারণ বিপক্ষ নিজের চারদেয়ালের ভেতরে থাকা লোকেরাই।একটু মাথা তুলে বাঁচার লড়াই,একটু নিরাপত্তার লড়াই।
পারেনি।পায়েল পারেনি।গতসপ্তাহে তথা কথিত নিজের আপনজনদের হাতেই খুন হয় পায়েল।মেডিক্যাল রিপোর্টে পাওয়া যায় গলায় চাপ পরে মারা যায় পায়েল।চাপটা যে কোথায় পড়েছিল তা বোধয় স্বয়ং পায়েল ছাড়া কেউ জানে না।
ভাবছো আইন চলবে নিজের পথে...শাস্তি পাবে খুনিরা।না। সেটা হবার নয়।কারণ খুনিরা তো সমাজের উঁচু তোলার লোক।তারা কি খুন করতে পারে ? ববোধয় সে জন্যই পায়েলের শশুর বাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগের বদলে দেওয়া হয় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেবার অপেক্ষাকৃত লঘু মামলা।নিজের বাড়ির এলাকায় থেকেই পায়েলের শাশুড়ি পুলিশের খাতায় হয়ে যায় ফেরার।অবশেষে জনরোষে পরে তাকর গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় পুলিশ।
পায়েল চলে গেল...কিন্তুএমন তো হওয়ার কথা ছিলোনা।পায়েল কে হারিয়ে দেওয়া হলো।হেরে গেলাম আমরা।হেরে গেল গোটা পৃথিবী-ন্যায়, নীতি,ভরসা,স্বপ্ন সব।
লড়াইটা শুরু এখন থেকেই।পায়েলকে জিতিয়ে দেয়ার লড়াই,পায়েলদের জিতিয়ে দেওয়ার লড়াই।
আজ আমরা এবং পায়েলের বন্ধুরা,কাছের লোকরা মিলে ধুবুলিয়াতে মিছিল করে ,বক্তৃতা, স্লোগানে নিয়েছি লড়াই করার এক নতুন শপথ...এক সাথে,হাতে হাত রেখে।
পায়েল হত্যাকাণ্ডের বিচার পেতে এখনও অনেক রাস্তা বাকি সাথী।বাকি অনেক পথ চলার।
আজ হয়তো তুমি বাস্ত ছিলে কিংবা হয়তো এই ব্যাপারটা জানতে না । তাই আজ তোমাদের জানালাম।পরের আন্দোলনের দিন তোমায় সোশ্যাল মিডিয়াতে জানাবো সাথী।আমি কিন্তু সেই লড়াইয়ে আমার হাত ধরার জন্য আরো হাত চাই।সেইদিন রাস্তায় দেখা হবার সাথী।সেদিন হাত ধরবে হাত,আকাশ মাটি ফাটিয়ে উঠবে লড়াইয়ের স্লোগান,সবাই মিলে একসাথে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার স্লোগান।আজ নাহয় সেই শপথটাই করলাম।দেখা হচ্ছে সাথী।
No comments:
Post a Comment