Sustain Humanity


Tuesday, July 28, 2015

বাংলা দেশে সংখ্যালঘু কিশোর বিশ্বাস

বাংলা দেশে সংখ্যালঘু

কিশোর বিশ্বাস



বেলা এলিয়ে পড়েছে সূর্যের রং গড়িয়ে পড়েছে আকাশের সাদা মেঘে ,চারিদিগের কচি পাতায়-দিগ দিগন্ত সোনাময় হয়ে গেছে কিন্তু তাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করতে এগিয়ে আসছে রাতের অন্ধকার তবে তখনও খূরের ধূলা উড়ায়ে ঘরে ফেরেনি গোবৎস ,তখনও দীনান্তে ডানা ঝাপটিয়ে কুলায় ফেরেনি পক্ষীকূল -ঠিক এমন সময় সেখানে এসে পৌঁছালেন বিখ্যাত সাংবাদিক সুমিত বসাক ।তিনি যেখানেই পৌঁছান চারিদিকে যেমন সাড়া পড়ে যায় এখানে তেমন কিছুই ঘটল না -একি কোন মৃতপুরী নাকি কাঠের পুতুলের জগৎ শুধু বাড়ির মালিক নবীন মন্ডল খেকিয়ে উঠলেন -এ ছেমড়ি তোরা কোহানে গেলি? ঘর থেকে উত্তর এল ক্যান বাবা? মোর মুহি নূড়ো জ্বালাতি হবে। একটা বছর সাতেকের মেয়ে ভয়ে ভয়ে মাথা নীচু করে বাবার সামনে এসে দাঁড়াল । এট্টা চেয়ার নিয়ে আয়। সে ঘরে গিয়ে একটা এক হাত ভাঙ্গা প্লাষ্টিকের চেয়ার নিয়েএলে নবীন মন্ডল সুমিত বসাকে বললেন বয়েন বাবু বয়েন । তিনি চেয়ারটায় সাবধানে বসে বললেন বলেন নবীন বাবু। নবীন বাবু খনিকটা বারান্দার বাঁশের আড়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন কি আর কব সুমিত বাবু ---------- কিছু শুনব বলেই তো আপনার কাছে এসেছি। তবু ও খানিকটা উদাস ভাবে তাকিয়ে থেকে নিষ্পৃহ গলায় বললেন মোরা কি আর বাঁচিয়া আছি? এমন হতাস হলে তো চলবে না। হতাস না হইয়া কি করব? আমি একটু একটু শুনেছি তবু আপনার মুখ সব শুনে দেখি কি করা যায়। অতঃপর বলতে আরম্ভ করলেন নবীন বাবু -মোর বাবায় পাঠশালা ইষ্কুলির মাষ্টার ছেলো।তহন তো এই জয়ডিহিতি কিচ্ছু ছেলো না । বাবার মুহি শুনিছি রায়রা দশ কাঠা জমি দেছোলো আর সরকাররা সেহেনে এট্টা মাটির দেওয়ালের গোল পাতার লাম্বা ঘর করিয়া দেছোলো । সামনে এট্টা বট গাছ ছেলো তার তলায় খাড়া পাতার কুট্টিি ছল মাইয়ারা অ আ ক খ লেখত ঘরে কেলাস হতোো । দশ গেরামে ইষ্কুল নাই তা ও ছাত্তোর নাই । বাবায় হি্দু গেরাাম মুছলমান গেরম ঘুরিয়া ঘুরিয়া হাত পা ধরিয়া ছাত্তোর যোগাড় করত টাহা পয়সা কেউ দেয় কেউ দেয় না কিন্তুক চাতি গেলি ছা্তোর আর আসপে না। তাই খাইয়া না খাইয়া কোন মতে মোগো দিন চলত তবুও বাবাায় জমি বেচত না কত-মোগো পাচ বিঘা জমি মোর পূর্ব পুরুষির সম্পত্তি ,মোর কাছে গচ্ছিত রাখছে মুই মোর ছলরে দেবো তুই তোর ছলরে দিবি । মুই বেচপো ক্যান মুই কি বংশের কুলঙ্গার ? না খাতি পাইয়া মরিয়া গেলি ও বেচপো না।জমিডা এক দাগে। তহন তো বেশী দাম ছেলো না,বেশী ধান চাল ও হতো না ।তবু বাবায় মাষ্টারি ছাড়ল না । এই ছানা মিঞা হাফিজ মিঞা সবাই বাবার ছাত্তোর ছেলো মুই বাবার একমাত্র ছল ,মোর কোন বুন ও নাই ।বাবায় মরিয়া গেলি অনেক অভাব গেলো জমি মুই বেচি নাই ।
আর এহোন জমিডা পড়িছে ঢাহা খুলনা মহা সড়কের উপর। এহোন এহান থে বাস হু হু করি ঢাহায় যা্চ্ছে হু হু করি খুলনায় যাচ্ছে । বা দিকি যাচ্ছে বাগের হাট । জয়ডিহি এহোন এ্ট্টা মোকাম হতি যাচ্ছে। সেদিন ও ধলা মিঞা মোরে কত সাধা সাধি তোর জমিডা মোরে দে মুই তোরে আড়াই কোটি টাহা দেবানে । টাহায় টাহায় তোর ঘর ভরিয়া যাবেনে । ইন্ডিয়ায় যাইয়া এই টাহায় তোর তিন পুরুষ পার উপর পা তুলিয়া খাতি পারবে । হয়তো আরো বেশী দেতো কিন্তুক মুই রাজী হই নাই বাবার সেই কথা -------------সেই জমি হাফিজ ভাই জাল দলিল করিয়া নেলো। সুমিত বাবু এত বড় পত্রিকার এত বড় সাংবাদিক তিনি অনেক কিছু জানেন তবু তিনি ভাল করে জেনে নিতে চান তাই জিজ্ঞাসা করলেন কোন হাফিজ মিঞা? ক্যান হাফিজ মিঞারে চেনেন না ? বলুন না ? হাফিজ মিঞা হলো গিয়া এই বাগের হাট জিলার মোল্লার হাট থানার বি এন পির সিক্রেটারী ।বড় নেতা হেভি ক্ষ্যামতা ।এহোন সরকারে নাই তাই জমিডা আবার বেচিয়া দেছে ছানা ভাইয়ের কাছে । কোন ছানা ভাই ? আপনে এডা কেমন কথা কইলেন ?ছানা মিঞারে চেনেন না ছানা মিঞারে বাংলা দ্যাশে সহলে চেনে ছানা ভাই ও আওয়ামী লীগের এই থানারই সিক্রেটারী ,আবার মূক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি বর্তমান উপ জেলার ও চেয়ারম্যান। তিনি এ কাজ করতে পারলেন ? সুমিত বাবু আপনে সবই জানেন তবু----------ক্যান আওয়ামী লীগ কয় নাই মোশ্শাইরা থাকলি ভোট না থাকলি জমি । আর বি এন পির সহযোগী জামাতরা তো কয় এট্টা দুডো কাফের ধর সহাল বিয়াল নাষ্তা কর ।আরো কইছে বাংলা দ্যাশে আর য্যান কোন মালাউনির বউ এর প্যাটে কোন মালাউনির বা্চ্ছা না হয় । সুমিত বাবু এসব জানেন নবীন মন্ডল ও তা জানেন তবু কথায় কথায় বেরিয়ে পড়ল। সুমিত বাবু বললেন থাক ও সব কাজের কথায় আসুন -হাফিজ মিঞার কাছে গিয়েছিলেন ? হ গিছিলাম । কি বললেন ? কল জমি তো মোর নাই মুই বেচিয়া দিছি । ছানা ভাইয়ের কাছে গিছিলেন ? গিছিলাম । তিনি কি বললেন ? কলেন রাস্তার দিকি দুই বিঘা তুই মোরে লিহিয়া দে মুই তোরে তিন বিঘা ছাড়িয়া দেবানে । থানায় গিছিলেন ? থানা তো মোগো ধমকাইয়া তাড়াইয়া দেলো কলো তোরা মোশ্শাইরা বড্ড বাড় বেড়েছিস পিপড়ার পাখা হয় মরিবার তরে । পূজা কমিটির উপ জেলার সভাপতিকে বলেছেন ? তিনি কলেন মুই অসহায় । হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদকে বলেছেন ? কইছি । তারা কি বলল ? কল মোরা আর কি করব সারা বাংলা দ্যাশে এমন ঘটনা শত শত ঘটতিছে । প্রধান মন্ত্রীকে লিখেছেন ? হ,লিখছি । কত দিন হলো ? তা প্রায় ছ,মাস হতি গ্যালো । ।কোন উত্তর ? না।

No comments:

Post a Comment